Health News

চিনি খাওয়া কতটা ক্ষতিকর তা ভাবতেও পারবেন না

চিনি খাওয়া – আপনার-আমার খাদ্য তালিকায় নিশ্চই মিষ্টি খাবারের নাম রয়েছে আর মিষ্টি খাবার মানেই জিভে জল আর মিষ্টি মানেই চিনি৷ অথচ এই চিনিই কিনা শরীরে বিষের মতো ক্ষতিকর! এমন এক অবিশ্বাস্য তথ্যই দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনির্ভাসিটি অব লিভারপুলের গবেষক সায়মন ক্যাপওয়েল। চিনিকে তিনি নব্য বিষ হিসেবে অখ্যায়িত করেছেন

সায়মন ক্যাপওয়েল তার গবেষণার ফলাফল জানার পর বিশ্বের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যে চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনবে বলে আশা করছেন সায়মন। চিনির ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য একটি ক্যাম্পেইন দলের সদস্য হয়ে কাজ করছেন সায়মন ক্যাপওয়েল। আসলে এখন দেখার বিষয় যে, তার এই উদ্দেগ কতটা সফল হবে।

চিনির ক্ষতিকারক যে প্রভাব মানুষের মধ্যে বিদ্যমান তা হতে স্থূলতা, বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধির পেছনে দায়ী। এজন্য খাদ্যপণ্যে চিনির পরিমাণ শতকরা ৩৫% কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জিরো ফ্যাট ইয়োগার্ট (দই) ক্যানে প্রায় ৫ চামচ পরিমাণ চিনি থাকে। টমেটো স্যুপে থাকে প্রায় ৪ চামচ চিনি। চকলেট বারে থাকে প্রায় ৮ চামচ চিনি। বিশেষ করে প্যাকেটজাত খাদ্য উপাদানে ব্যাপক পরিমাণে চিনি ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে, আমরা প্রয়োজনে – অপ্রয়োজনে প্রচুর পরিমাণে চিনি খেয়ে ফেলি!

সাধারণত একজন পূর্ণবয়স্ক নাগরিক দিনে গড়ে প্রায় ১২ চামচ চিনি খেয়ে থাকেন। অনেকে আবার দিনে ২০ চামচ চিনিও খেয়ে থাকেন। চিনি আহরণের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫ চামচ চিনি খেতে পারেন। তবে আপনি যদি এর বেশি পরিমাণ চিনি খান তবে তা নিঃসন্দেহে আপনার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, বিশ্বব্যাপী মোটা শরীর বা স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে মৃত্যুর পেছনে প্রধান ভিলেন হিসেবে কাজ করে এই চিনি । উলফসন ইন্সটিটিউট অব প্রিভেনটিভ মেডিসিনের গবেষক গ্রাহাম ম্যাকগ্রেগর বলেন, এখনই বিশ্বব্যাপী চিনির ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। নতুবা চরম বিপদ অসন্ন। এ বিষয়ে অপর চিকিৎসক মি. বোরিস জানান, চিনি কোনোভাবেই খাদ্যপণ্যের পুষ্টিমান বাড়ায় না, এমনকি ভোক্তাকে পরিতৃপ্তও করে না। স্থূলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চিনি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগের সংক্রমণে ভূমিকা রাখে।

তাহলে বুঝতে পারছেন চিনি খাওয়া কতটা ক্ষতিকর। যা কিনা বিষের প্রভাবে সমান। কেননা বিষ শরীরে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে আর চিনি যা কিনা আস্তে আস্তে মানব শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। তাই এই স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে চিনির ব্যবহার রুখতে হবে না হলে জনস্বাস্থ্য ব্যাপক হুমকির মুখে পড়ছে।

পাঠকের মতামত:

Back to top button