অ’সুস্থ মাকে রাস্তায় ফেলে গেল ছে’লে, গোসল করিয়ে হাসপাতা’লে নিলেন ওসি

মাকে রাস্তায় ফেলে – পটুয়াখালীর দশমিনায় জয়নব বিবি (৬০) নামের এক অ’সুস্থ মাকে রাস্তায় ফেলে গেলেন ছে’লে। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) উপজে’লার সদর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুরের টিটিসি ট্রেনিং সেন্টার এলাকা থেকে ওই অ’সুস্থ মাকে উ’দ্ধার করেছে পু’লিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজে’লার কনকদিয়া ইউনিয়নের জয়ঘোড়া গ্রামের আলাউদ্দিন আকনের সাথে জয়নব বিবির বিয়ে হয়।
এই দম্পতির রুনা বেগম ও মো. আরিফ নামে দুই সন্তান রয়েছে। স্বামীর মৃ’ত্যুর পর ছে’লে আরিফকে বিয়ে করান ও মে’য়ে রুনাকে বিয়ে দেন মা। তারা নিজের মতো সংসার করছে। তবে দীর্ঘদিন বৃদ্ধা জয়নব বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে বিছানা থেকে উঠতে পারেননি। বিছানায় খাওয়া-দাওয়া আর বিছানাতেই মলত্যাগ করায় মায়ের প্রতি অ’তিষ্ঠ হন ছে’লে আরিফ ও পুত্রবধূ কুলসুম বিবি। এক অটোচালকের মাধ্যমে কয়েক মাস আগে দশমিনা উপজে’লার সদর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুরের টিটিসি ট্রেনিং সেন্টার এলাকার সড়কে মাকে ফেলে যান ছে’লে আরিফ। এরপর থেকে তিনি বৃষ্টিতে ভিজে রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. মামুন তানভীরের মাধ্যমে দশমিনা থা’নার ওসি মো. জসিম বিষয়টি জানতে পারেন। ওসি মো. জসিম সংবাদকর্মী মো. মামুন তানভীরকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে ওসি সহকর্মী এসআই মো. ই’মানুল ইস’লাম ইমন, এসআই মো. মেহেদি হাসানকে নিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উ’দ্ধার করে নিজ হাতে গোসল করান। পরে পু’লিশের ভ্যানে দুপুরে তাকে দশমিনা হাসপাতা’লে ভর্তি করান।
উপজে’লা স্বাস্থ্য কর্মক’র্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৃদ্ধার চিকিৎসার জন্য ফ্রিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে দশমিনা হাসপাতা’লে চিকিৎসা চলছে তার।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শামিম মৃধা জানান, বৃদ্ধাকে এলাকার রাসেল নামে একজনের দোকানে এক মাস থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃদ্ধা থাকার স্থানে মলত্যাগ করায় তাড়িয়ে দেয়া হয়।
স্থানীয় গৃহবধূ রুকেয়া বেগম জানান, এলাকার কয়েকজন নারী দীর্ঘ দুই মাস ওই বৃদ্ধাকে মাঝে মাঝে খাবার দিয়ে যান। রাস্তার পাশে বসে থেকে কা’ন্না করে দিন কা’টান ওই বৃদ্ধা।
বৃদ্ধা জয়নব বিবি কা’ন্নাজ’ড়িত কণ্ঠে বলেন, দশমিনা উপজে’লার পশ্চিম আলীপুরায় মে’য়ে রুনাকে বিয়ে দিয়েছি। আমি মে’য়ের সাথে থাকতে চাই। ছে’লের কাছে ফিরতে চাই না। মে’য়েও আমা’র খোঁজখবর নেয়নি। মাটিতে শুয়ে থাকায় পোকার কামড়ে অনেক ক’ষ্ট হয়।
দশমিনা থা’নার ওসি মো. জসিম বলেন, পু’লিশ সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে। ভালো কাজ করতে পারলে সবসময় ভালো লাগে। ওই বৃদ্ধাকে উ’দ্ধার করে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় দেয়া হয়। তার খাবারও কিনে দিয়েছি। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আমি নিয়মিত ওই বৃদ্ধার খোঁজখবর রাখব। সবসময় তার পাশে আছি। তিনি সুস্থ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।