এসি বিস্ফোরণ ঘটতে পারে যেসব কারণে

এসি বিস্ফোরণ – দেশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসির ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনি এসি বিস্ফোরণের ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে প্রায়ই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই ঘটছে এসি বিস্ফোরণ ঘটছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসিতে কেন বিস্ফোরণ ঘটে? এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান ড. মহম্মদ আলি বলেন, এসির মধ্যে কম্প্রেসার থাকে। এই কম্প্রেসারের গ্যাসের প্রেসার লেভেলের দুটি লিমিট থাকে—সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন। প্রেসার সর্বোচ্চ পর্যায় অতিক্রম করলে এসি বিস্ফোরিত হতে পারে।
এদিকে এসি সার্ভিসিং এক্সপার্ট দুলাল দাস বলেন, পেশাদার টেকনিশিয়ানের সাহায্যে প্রতি বছরে অন্তত একবার এসি সার্ভিসিং করানো উচিত। বিশেষ করে শীতের সময় দীর্ঘ কয়েকমাস বন্ধ থাকার পরে গরমের আগে আবার চালু করার আগে অবশ্যই সার্ভিসিং করে নেয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে এসিসংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষনের কোনো বিকল্প নেই। তাই এসি দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণগুলো জেনে রাখা প্রয়োজন—
* অনেক পুরনো বা নিম্নমানের এসির ব্যবহার।
* রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক ক্ষমতার এসি ব্যবহার না করা।
* কম্প্রেসরের ভেতরে ময়লা আটকে জ্যাম তৈরি হওয়া।
* এসি থেকে গ্যাস লিক হওয়া এবং সেটি রুমে বা এসির ভেতরে জমে থাকা।
* দীর্ঘক্ষণ টানা এসি চালানো, যার ফলে এসির প্রেশার বেড়ে যায় এবং সেটিকে গরম করে তোলে।
* এসির ভেতরের বা বাইরের বৈদ্যুতিক তার নড়বড়ে হয়ে থাকা, যা শর্টসার্কিটের তৈরি করতে পারে।
* বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজের কারণে ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ওপর চাপ তৈরি হওয়া।
* অনেকদিন এসির সার্ভিসিং না করানো।
* বজ্রপাত বা বৃষ্টির সময়ে এসি চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ ভালো আর্থিং ব্যবস্থা না থাকলে এটিও এসির দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।
এসি দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত। যেমন—
* নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের এসি কেনা।
* পেশাদার এসি সার্ভিসিং এক্সপার্টদের মাধ্যমে নিয়মিত সার্ভিসিং করানো।
* রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক মাত্রার এসি নির্ধারণ।
* দীর্ঘসময় একটানা এসি না চালিয়ে মাঝে মাঝে বিরতি দেয়া।
* বৈদ্যুতিক সংযোগ, সকেট, ফিল্টার নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা।
* হাই ভোল্টেজ এড়াতে বাড়িতে সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা।
* বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় এসির ব্যবহার বন্ধ রাখা। এছাড়া বাড়ির ছাড়ে বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
* একনাগাড়ে আট ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া আউটডোর মেশিন এমন স্থানে বসাতে হবে, যেন পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে।