সাবরিনার সাথে অন্তরঙ্গ কে এই ডা. মিলন, চটে গিয়েছিলেন স্বামী আরিফ

করোনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী তেজগাঁও থানার হাজতখানায় সারারাত জেগে ছিলেন। হাজতখানার সামনে একজন নারী প্রহরীর সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা বলেছেন। এছাড়া ভেতরে পায়চারি করেছেন।
থানায় নেওয়ার পর তাকে কিছুক্ষণ একজন পুলিশ কর্মকর্তার কক্ষে বসানো হয়েছিল। এরপর তাকে হাজতে রাখা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা একথা জানান। তিনি বলেন, ‘থানা হাজতেই তাকে রাখা হয়েছে। আমাদের দুজন নারী প্রহরী সেখানে ডিউটিতে ছিলেন। তাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা বলেছেন।’
সোমবার (১৩ জুলাই) সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাকে পুলিশ পাহারায় আদালতে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও থা’নার এসআই নিজাম। সাবরিনাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
জানা গেছে, রবিবার (১২ জুলাই) দুপুরে ডা. সাবরিনাকে গ্রেফতারের পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে প্রথমে একজন পুলিশ কর্মকর্তার কক্ষে বসানো হয়। এরপর হাজতে রাখা হয় বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও থানার এক পুলিশের কর্মক’র্তা।
থানায় সাবরিনার স্বজনরা ও একজন গৃহকর্মী ছিলেন। থানা থেকে সরবরাহ খাবারই রাতে খেয়েছেন তিনি। হাজতখানায় তাকে পায়চারি করতে দেখেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগকে অনিয়মের স্বর্গরাজ্য করে রেখেছেন ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। আর ছায়া হয়ে পাশে থেকেছেন ‘ইউনিট প্রধান’ ডা. কামরুল হাসান মিলন।
গত এক বছর ধরে কার্ডিয়াক সার্জারির বিভাগীয় প্রধানের কক্ষ এবং পদবি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন মিলন। তাদের অনিয়মে অতিষ্ঠ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের একটি ইউনিটের প্রধানের দায়িত্বে আছেন ডা. কামরুল হাসান মিলন। তার অধীনেই রেজিস্ট্রার চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। অভিযোগ রয়েছে, মিলনের ছত্রছায়াতেই অনিয়মের চূড়ায় উঠিছিলেন সাবরিনা।
সাবরিনার কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে টানা তিন দিন সময় সংবাদ। সহকর্মী বা অধীনস্ত কেউই সরাসরি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে সাহস করেন না। তবে সবার ভেতরেই ক্ষোভ, রয়েছে অভিযোগের ফিরিস্তিও।
অভিযোগ রয়েছে, সাবরিনা দিনের পর দিন কাজ না করেই নিতেন বেতন। ডা. মিলনের সুনজরে থাকায় অনুপস্থিত থাকার পরও নাম উঠে যেত হাজিরা খাতায়। একজন স্টাফ জানান, ওনাকে একদিনও আমি দেখিনি।
সাবরিনা-মিলনের ঘনিষ্ঠতায় চটে গিয়েছিলেন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীও। এ নিয়ে হাসপাতালের ভেতরেই মিলনের সঙ্গে বিবাদেও জড়ায় জেকেজি কর্নধার আরিফ। এ ঘটনায় জিডিও হয় থানায়।
সাবরিনা বলেন, যদি এরকম কোনো সম্পর্ক হত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মামলাই করত। কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে সাপ, পদে না থেকেও কার্ডিয়াক সার্জারির বিভাগীয় প্রধানের কক্ষটি দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছেন ‘ইউনিট প্রধান’ কামরুল হাসান মিলন।
নিজের নামের পাশেও লিখে রেখেছেন বিভাগীয় প্রধান। বাধ্য হয়ে বর্তমান বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রামাপদ সরকার ছোট একটি কক্ষে নেমপ্লেট লাগিয়ে কোনোমতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজিন হননি ডা. কামরুল হাসান মিলন। মিলন বলেন, পরিচালক সাহেব বলেছেন, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার আগে তাকে জানাতে। প্রশ্নের মুখোমুখি হৃদরোগ ইনস্টিটিউট প্রশা’সনও। চোখের সামনে সবকিছু ঘটার পরও লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবে, বলছে হাসপাতাল প্রশা’সন।