Miscellaneous News

ডিসিকে ‘স্যার’ বলতে বাধ্য করায় বেরোবি শিক্ষকের অবস্থান কর্মসূচি

রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনকে ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উমর ফারুক। স্যার বলা বাধ্য করার প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে তার কন্যাসহ অবস্থান কর্মসূচিতে বসেছেন ওই শিক্ষক।

বুধবার (২২ মার্চ) রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে পড়েন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক। সঙ্গে তার কন্যাশিশু অক্ষর রয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে হাতে নিয়ে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে ‌রংপুরের জেলা প্রশাসক ‘স্যার’ ডাকতে বাধ্য করায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এ সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কিছুসংখ্যক শিক্ষক সেখানে অংশগ্রহণ করেন।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিশ্চিত করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ।

এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়।

রাত ৯টায় জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন ঘটনাস্থলে এসে দুঃখ প্রকাশ করলে পরিস্থিতির অবসান হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে আপসরফা হয়ে ফটোসেশনের মাধ্যমে উদ্ভুত পরিস্থিতির অবসান হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষক উমর ফারুকের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ভবনের দোতলা থেকে জেলা প্রশাসক ডক্টর চিত্রলেখা নাজনীন অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে নিচে নেমে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এসময় সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীসহ কৌতুহলী মানুষজনের উদ্দেশে অভিযোগকারী শিক্ষক উমর ফারুক বলেন, ‘আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা প্রশাকের দপ্তরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই একটি স্কুলের বিষয়ে।

রংপুরের প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের নামে প্লে গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত গত তিন বছর থেকে একটি স্কুল পরিচালনা করে আসছেন শিক্ষক উমর ফারুক। সেই স্কুলের কাজে গিয়েছিলেন তিনি।

শিক্ষক উমর ফারুকের অভিযোগ, জেলা প্রশাসককে স্যার সম্বোধন না করায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। এসময় এ বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষক উমর ফারুক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে একাকি অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক নিচে নেমে এলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন শিক্ষকও সেখানে উপস্থিত হন।

এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ উপস্থিত সকলের উদ্দেশে বলেন. ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। একজন জেলা প্রশাসককে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্যার বলবেন।’

এদিকে রাত পৌনে ৯টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন এ ধরনের উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি স্যার সম্বোধন করতে বলিনি। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি।

পাঠকের মতামত:

Back to top button