ফের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ এবং উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন যারা

ফের করোনায় আক্রান্ত – করোনাভাইরাস কি দ্বিতীয়বার কাউকে আক্রান্ত করতে পারে- এ প্রশ্নের জবাবে কিছুদিন আগেও বিশেষজ্ঞরা সাফ জানিয়েছিলেন, মানবদেহে দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নেই। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছেন, কারো করোনা হওয়ার পর সে যখন সুস্থ হয়ে উঠে, তখন তার দেহে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
তবে গবেষকদের সব হিসেব ভুল প্রমাণ করে চীন, কোরিয়া, ইরান, ভারত, বাংলাদেশসহ প্রায় সব দেশেই দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে চলছে।
ফলে বিশেষজ্ঞরা নড়েচড়ে বসেছেন। নতুন করে হিসেব কষছেন, দ্বিতীয়বার কারা এবং কোন ধরনের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন এবং কারা কম বা উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন?
দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্তের রহস্য
দ্বিতীয়বার করোনাই আক্রান্ত হওয়ার রহস্য খোলাসা করেছেন ভারতের বিখ্যাত ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডা. অমিতাভ নন্দী। আনন্দবাজারে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুই কারণে করোনাভাইরাস দ্বিতীয়বার মানবদেহে আক্রমণ করতে পারে।
প্রথমত, পয়লাবার ভাইরাসের সঙ্গে এন্টিবডির যুদ্ধে ভাইরাসটি পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায়নি, তবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সময়ের সাথে সাথে দ্বিতীয়বার আক্রমণ করে।
বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করে ডা. নন্দী বলেন, ভাইরাসের ধর্ম হলো, ওষুধের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ করে সে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে। যখন আর কুলিয়ে উঠতে পারে না, তখন সে নিজেকে সাময়িক নিষ্ক্রিয় করে রাখে।
এতে করে, ওষুধ মনে করে ভাইরাসটি মরে গেছে। আসলে মরেনি। পরবর্তীতে কিছুদিনের মধ্যে, আনুমানিক দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যেই ভাইরাসটি আবার আগের চেয়েও বেশি শক্তি নিয়ে আক্রমণ করে। করোনাভাইরাসের যেহেতু ওষুধ আবিষ্কার হয়নি, সেক্ষেত্রে ভাইরাসটি অ্যান্টিবডির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে।
আরেকটি সম্ভাব্য কারণ হলো, ভাইরাসটি মরে যায় ঠিকই, তবে সে বংশবিস্তার করে যায়। এভাবেও দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হতে পারে।
দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যাদের বেশি , যাদের কম
এ সম্পর্কে ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নন্দী বলেন, ঠিক নিশ্চিতভাবে বলা যায় না, কারা ঝুঁকিমুক্ত আর কারা ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, যাদের পড়ারফ-১৯ পজিটিভ ছিল কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে দেহে শক্তিশালী এন্টিবডি তৈরি হয়নি তারা দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে আছেন।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের মাঝে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে কিংবা উপসর্গ দেখা দিতে খুব বেশি সময় নিয়েছে- এ ধরনের মানুষের দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম বলে মনে হচ্ছে।