‘মা তুমি ভাত খেয়ে ঘুমাও আমি নামাজে যাচ্ছি’

ভাত খেয়ে ঘুমাও – মা তুমি ভাত খেয়ে ঘুমাও, আমি মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছি, মাকে একথা বলে ফোন কেটে দেন নয়ন। সেই নয়ন এখন হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে লালমনিরহাটে থাকা মা বুলবুলি বেগমের সঙ্গে এমনটাই কথা হয় নয়নের। কথা শেষে এশার নামাজ আদায় করতে নারায়ণগঞ্জের তল্লার মসজিদে যান তিনি।
এর কয়েক ঘণ্টা পর নয়নের বন্ধু ফোন দিয়ে জানায় মসজিদে বিস্ফোরণে নয়ন দগ্ধ হয়েছেন। মা রাতেই লালমনিরহাট থেকে রওনা দিয়ে সন্তানের খোঁজে ঢাকায় আসেন। তবে সন্তানের দেখা পাননি। সন্তান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি। আর মা হাসপাতালের অভ্যর্থনা কক্ষে আহাজারি করছেন, ‘আমার নয়নকে একটু দেখাও।’
শনিবার সকালে হাসপাতালের অভ্যর্থনা কক্ষে বসে মা বুলবুলি বেগম বলেন, আমাকে এশার নামাজের আগে নয়ন ফোন দেয়। বলে, মা আপনি ভাত খেয়ে ঘুমান। আমি মসজিদে গেলাম। এরপর আর কথা হয়নি। আমার ছেলের আয়েই সংসার চলতো। আর কিছু নাই, অন্য সন্তানরা সব ছোট ছোট।
নয়নের গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার তালুক পলাশী গ্রামে। তার বাবা মেহের আলী। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে নয়ন সবার বড়। পরিবারসহ নয়ন নারায়ণগঞ্জ ছিলেন। জানুয়ারিতে তার বাবা-মা ও ভাই-বোন গ্রামে চলে যায়। এরপর থেকে নয়ন একাই নারায়ণগঞ্জ ছিলেন। একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেন তিনি।