সেই মক্ষীরাণী সাবরিনার এক স্ট্যাটাস নিয়ে তুলকালাম

করোনাভাইরাস পরীক্ষায় জালিয়াতি করার অভিযোগে সিলগালা করে দেয়া প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপরই তার একটি স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
গত ২৪ জুন নিজের ফেসবুকে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে সাবরিনা লিখেন, ‘‘অনেক আশা নিয়েই JKG health care শুরু করেছিলাম বিনামূল্যে সবাসথ্য সেবা দেবার জন্য!!! যেকোন জিনিষ প্রতিষ্ঠা করাই বড্ড কঠিন! অনেক কষ্ট করেছি ! করোনা বিপর্যয় শুরু হবার পর প্রথম এলাকা ভিত্তিক sample collection শুরু হয়- কত মানুষের কত রকম বাঁধা! কোন দোকান খোলা নেই, জিনিষপত্র নেই, কেউ ভয়ে করোনা নিয়ে কাজ করতে চায় না! সব পেরিয়ে পথ চলা!!! কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই আমাকে সরে আসতে হয় ! যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন তারা জানেন, আদর্শ আর ভালবাসার conflict এ আমি সবসময় আদর্শকেই বেছে নিয়েছি! ৪/৬ তারিখেই সবাসথ্য অধিদপ্তর আর National Institute of Laboratory Medicine and Referral Centre ল্যাবের অধ্যাপক তুষার স্যার এবং আমার কাছে যেকজন সাংবাদিক ভাই ও বোনের নম্বর ছিল তাদের জানিয়ে আমি সরে যাই এখান থেকে! আমি চলে গেছি মানে এই নয় যে, এখানের কোন সমস্যায় আমি পুলকিত হবো বা তা আমাকে ছোঁবে না! যদি কেউ দোষ করে থাকে তার প্রমান সাপেক্ষে অবশ্যই সাজা হবে! হওয়াই উচিত! তবে আমার প্রশ্ন হলো, দু’একজন কর্মচারীর নামে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটা প্রতিষ্ঠান যে এতদিন ধরে সেবা দিয়ে গেছে সব মুহূর্তেই মিথ্যা হয়ে যাবে ???
আমার বেশিরভাগ FB friend আমার জন্য উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন, ভরসা দিয়েছেন-তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা! যারা চিরকালই আমার দোষ বের করতে পেরে বিমল আনন্দ পেয়েছেন তাদের জন্য এই Post নয় !
পুন: যারা ভাবছেন, আমি JKG তে নেই এই তথ্য আগে কেন জানালাম না-তাদের উদ্দেশ্যে বলব, বিচ্ছেদ -তা সে যার সাথেই হোক -কোন ঢাক ঢোল পিটিয়ে জানানোর জিনিষ নয়! পুন ২: আমি মোটেই থেমে থাকব না -মানুষের জন্য কাজ করে যাব, ইনশাআল্লাহ!’’
যেটা নিয়ে রীতিমত এখন হৈচৈ। সেই সাথে তার এই স্ট্যাটাসের নিচেও অনেকের কমেন্ট পড়ে। আর কমেন্টর উত্তরও দেন তিনি। যার একটা ছোট্র উদাহরণ দেওয়া যায়।
মোশারফ হোসেন নামের একজন কমেন্ট করেন, ‘এই রকম বাটপারি যে প্রতিষ্ঠান হতে হয়েছে তাদের সবার পাছার চামড়া তুলে নেয়া উচিৎ। এই মহা বিপর্যয়ের সময় মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি যারা খেলে তাদের প্রত্যেকের ফাঁসি হওয়া উচিৎ।’ প্রতি উত্তরে সাবরিনা বলেন, ‘অপরাধ প্রমান না হতেই আপনি আমাদের ফাঁসি দিয়ে দেন! এটাই হবে আমাদের উপযুক্ত পুরস্কার। ছি।’
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার অনুমোদন থাকলেও পরীক্ষা না করে ভুয়া ফলাফল দেয়ার অভিযোগে ২৩শে জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযোগ সম্পর্কে সাবরিনা চৌধুরীর কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও জেকেজি’র জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগকে ‘অপপ্রচার’ বলে উল্লেখ করে কয়েকদিন আগে সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি দেন তিনি।
ওদিকে, করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির ঘটনায় জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ ওঠার পর শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি সংবাদি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে জেকেজি’র স্বত্বাধিকারী আরিফুল হক চৌধুরীর আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় জেকেজি গ্রুপকে কোভিড পরীক্ষার অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।