হজ করার টাকা তো আমার নাই তবে আমার মৃ’ত্যুটা যেন মসজিদেই হয়
হজ করার টাকা – স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তানকে নিয়ে এক রুমের একটি টিনশেড ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন সাংবাদিক নাদিম আহমেদ ফিদা। সাংবাদিকতা করার সুবাধে সামান্য যা সম্মানি পেতেন তা দিয়েই মোটামুটিভাবে চলে যেত সংসার।
পরিবারে একমাত্র তিনিই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। বর্তমানে তিনি আর জীবিত নেই। নামাজ পড়তে গিয়ে বি’স্ফোরণে গু’রুতর আ’হত হয়ে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাতে মা’রা গেছেন।
রাতেই খানপুর জোড়াটাংকি সংলগ্ম মাঠে সাংবাদিক নাদিম আহমেদের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জা’নাযা শেষে শহরের ডন চেম্বার এলাকায় তার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, এক রুমের একটি টিনশেড রুমে বসে তার স্ত্রী লীমা আহমেদ স্বামীর স্মৃতি মনে করে আ’হাজারি করছেন।
আর পাশে আত্মীয় স্বজনরা বসে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। আ’হাজারি থামিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে লীমা আহমেদ বলেন, সাংবাদিকতা করে যে সম্মানী পেতেন তাতেই চলতো সংসার। কিন্তু সেটাও সংসার চলানোর মতো যথেষ্ট ছিল না।
তাতেও কখনো কারো কাছে ঋণ বা ধার নেয়নি। না খেয়ে থাকলেও অ’বৈধ পথে হাঁ’টেননি। সত্য ভাবে বাঁ’চার চেষ্টা করেছেন সব সময়। তিনি বলেন, নাদিম প্রায়ই বলতো হজ করার টাকা তো আমার নাই তবে আমার মৃ’ত্যুটা যেন মসজিদে হয়।
তখন আমি নিজেও বুঝতে পারতাম না কেন সে এসব বলে। মসজিদের বি’স্ফোরণের ঘটনায় তার অকালে চলে যাওয়ায় আমার মনে হচ্ছে আল্লাহ তায়লা তার দোয়া কবুল করেছেন। লীমা বলেন, একমাত্র ইনকামের লোক ছিলেন তিনি। এখন ইনকামের লোক চলে গেছে।
ছেলেকে নিয়ে আমি কই যামু, এখন কি করমু। এখনও তো ছেলের পড়ালেখা শেষ হয় নাই। কি কাজ করবো। কিভাবে সংসার চলবো। করোনার শুরুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘ’টনায় হাত ভে’ঙে যায়। এছাড়াও আরো অনেক রো’গ ছিল। এতো কিছুর পরও ক’ষ্ট করে সংসার চলতো।
একমাত্র সন্তান প্র’সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে লিমা আহমেদ আবারো আ’হাজারি করতে করতে বলেন, একমাত্র ছেলে নাফি আহমেদ বার একাডেমী স্কুলের নবম শ্রেনির ছাত্র। এতো কষ্টে সংসার চলতো কিন্তু কখনো ছেলের পড়ালেখা বন্ধ করেনি। আশা ছিল ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবে। ভালো কোন চাকরি করবে। কিন্তু ওর আশা আর পূরন হলো না। আমার ছেলের পড়ালেখাই বন্ধ হয়ে যাবে।