National News

জেলে প্রথম রাত যেমন কাটালেন ডা. সাবরিনা

করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার ঘটনায় জেকেজি’র চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (১২ জুলাই) দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনাকে গ্রেপ্তারের পর প্রথম রাতটা তাকে তেজগাঁও থানার হাজতখানায় নির্ঘুম কাটাতে হয়েছে।

সোমবার (১৩ জুলাই) সকালে ডিএমপির তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয় থেকে রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে থানায় এনে হাজতে রাখা হয়। বর্তমানে ডা. সাবরিনা সেখানেই আছেন। এদিকে আজ সোমবার (১৩ জুলাই) রিমান্ডের জন্য আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা।

এর আগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নামে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করে সরবরাহের অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার সকালে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে ডাকা হয় জেকেজির চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে।

জিজ্ঞাসাবাদে জেকেজির সঙ্গে তার সম্পৃকতাসহ কোনো বিষয়েই আশানুরূপ উত্তর না পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে তেজগাঁও থানায় পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে বহিষ্কৃত ডা. সাবরিনা আরিফকে চারদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। সোমবার (১৩ জুলাই) সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

সোমবার (১৩ জুলাই) তেজগাঁও থানা পুলিশের ৪ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) ফরিদ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘তেজগাঁও থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে সাবরিনাকে আদালতে হাজির করেন। সাবরিনার পক্ষে আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সাবরিনাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠান।’

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডা. সাবরিনাকে আদালতে নিয়ে ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে জানিয়েছিলেন তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন।

ডা. সাবরিনা জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী। পারিবারিক নাম সাবরিনা শারমিন হুসাইন হলেও তিনি ডা. সাবরিনা আরিফ নামেই পরিচিত।

গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগীয় উপকমিশনারে (ডিসি) কার্যালয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়াসহ নানা বিষয়ে ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরইমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাও করেছে।

সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গের অভিযোগে গতকালই ডা. সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এদিকে করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন সাবরিনার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীও।

এর আগে গত ২৩ জুন জেকেজিতে অভিযান চালায় তেজগাঁও থানা পুলিশ। অভিযানে প্রতারণার মূল হোতা ও জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তেজগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে বাংলাদেশি প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিতো। আর বিদেশি রোগীদের কাছ থেকে নিতো ১০০ ডলার করে।

পাঠকের মতামত:

Back to top button