প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণ

‘ভাই, মানুষ মইরা পইড়া রইছে। মনে হয় ফিল্ম দেখতাছিলাম। মানুষ উইড়া উইড়া যাচ্ছে চারদিকে। ওপর থেকে যখন গ্লাসগুলো আসতেছে, তখন মনে হয় শুটিংয়ে যেভাবে মানুষের শরীরে ঢুকে যায়, ঠিক সে রকম পরিস্থিতি দেখছিলাম।’
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার বর্ণনা এভাবেই দিচ্ছিলেন স্থানীয় একটি দোকানের কর্মচারী সম্রাটতিনি বলেন, ‘কস্তুরী হোটেল থেকে খাবার খেয়ে আমি মাত্র বের হয়েছি। তারপরই বিকট শব্দে ধোঁয়া শুরু হয়। ১০০ জনের ওপরে মানুষ আহত হয়েছে। ভবনের পাশে যারা দোকানদার ছিল, তারা আহত হয়েছে বেশি। পাশে একজন মহিলা ছিল, সে মারা গেছে। একজন দোকানদার মারা গেছে। ভবনের ভেতর ট্রান্সপোর্টের একটা অফিস ছিল, তারা কাজ করছিল। তাদের অনেকে মারা গেছে এবং আহত হয়েছে।’
ঘটনার পর আমরা সামনে এগোতে পারিনি ধোঁয়ার কারণে’ উল্লেখ করে সম্রাট আরও বলেন, ‘ধোঁয়ার পরিমাণ কিছুটা কমার পর আমরা ভবনের কাছাকাছি যেতে পেরেছিলাম। তখন কয়েকজনকে উদ্ধার করেছি। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। ‘ক্যাফে কুইন’ নামের একটি বিল্ডিং থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে একটি সাত তলা ভবনে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে লাশের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। হতাহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সিদ্দিকবাজার এলাকায় নর্থসাউথ রোড পৌর ভবনে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির নিচতলায় স্যানেটারি মার্কেট রয়েছে। এ সময় পাশের পাঁচ তলা ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ করছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মরদেহ ঢামেক হাসপাতালে রয়েছে। লাশগুলো ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত অন্তত ১২০ জনের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে।’